বেশ কয়েকটি অর্জন ২০১৩ সালকে অবিস্মরণীয় করে রাখবে। কিন্তু অর্জনের পাশাপাশি এমন কিছু উদ্যোগ এবং ঘটনা ছিল যা অনেকেই ভুলে যেতে চাইবে। কারণ এক্ষেত্রে প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির ফারাকটা বেশ বড়ই ছিল। আর এর পরিপ্রেক্ষিতেই ২০১৩ সালের প্রযুক্তি বিশ্বের ১০ ফ্লপ উদ্যোগ এবং ঘটনা। সেগুলো হলো:
১.অ্যাপল আইফোন ফাইভ সি:
১.অ্যাপল আইফোন ফাইভ সি:
বেশ ঘটা করেই বাজারজাত করা হয়েছিল অ্যাপলের এই আইফোন। কিন্তু দিনশেষে গ্রাহকের নজর কাড়তে বেশ অসফল হয়েছে এই আইফোন। গ্রাহকদের মতে, প্লাস্টিক বডির কারণে প্রথমেই এই ফোনের প্রতি সবার খারাপ ইমপ্রেশন তৈরি হয়েছে। ফলশ্রুতিতে অ্যাপল লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি এবং অনুমিতভাবেই ফ্লপ তালিকায় সবার উপরেই রয়েছে এই আইফোন।
২ .স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ফোর:
গ্যালাক্সি এস ফোরের অবস্থা অনেকটা অ্যাপলের আইফোন ফাইভ সি এর মতোই ছিল। হাক-ডাক করে শুরু কিন্তু দিনশেষে ব্যর্থ। গ্রাহকদের অনেকে মানের দিক থেকে এই ফোন এইচটিসি ওয়ানের চেয়েও খারাপ বলে উল্লেখ করেন। ফলশ্রুতিতে ফ্লপ তালিকার দ্বিতীয় স্থানেই চলে আসে স্যামসাং-এর এই ফোন।
৩.স্যামসাং গ্যালাক্সি গিয়ার:
গ্যালাক্সি এস ফোরের মতো স্যামসাং গ্যালাক্সি গিয়ারও বলার মতো সাড়া জাগাতে পারেনি। যদিও স্যামসাং-এর এই স্মার্টওয়াচ নিয়ে বেশ সাড়া পড়েছিল। কিন্তু বাজারজাত হওয়ার পর গ্রাহকদের আহামরি সন্তুষ্ট করতে পারেনি। মধ্যখানে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে কিছু ক্রেতা। যার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্লপের তালিকাতেই স্থান হলো এই স্মার্ট ওয়াচের।
৪. ব্ল্যাকবেরি:
অনেকটা অনুমিতভাবেই ফ্লপ তালিকায় স্থান হয়েছে ব্ল্যাকবেরির। কারণ মন্দায় কাহিল ব্ল্যাকবেরির অপারেটিং সিস্টেম ১০ গ্রাহকদের সন্তুষ্ট করতে পুরোপুরি ব্যর্থ। যদিও শুরুর দিকে বেশ ভালো সম্ভাবনারই সৃষ্টি করছিল এ ব্ল্যাকবেরি।
৫.নকিয়া:
বিগত বছরটি বলতে গেলে নকিয়ার জন্য যাচ্ছেতাই কেটেছে। মাইক্রোসফটের কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়া এবং পরবর্তী সময়ে সাড়া জাগানো কোন ফোন বাজারজাত করতে না পারার কারণেই ফ্লপের তালিকায় স্থান হয়েছে নকিয়ার।
৬.ফেসবুক হোম:
জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুক তাদের জনপ্রিয়তাকে আরো বাড়ানোর প্রয়াস হিসেবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ’ফেসবুক হোম’ অ্যাপ চালু করে। কিন্তু ১.২ বিলিয়ন ফেসবুক ব্যবহারকারীর মধ্যে মাত্র ৫ মিলিয়ন ব্যবহারকারী এ অ্যাপটি ব্যবহার করে। ফল যা হওয়ার তাই হলো-প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির আকাশ-পাতালের ফারাক। তাই বছর শেষে এ অ্যাটিও ফ্লপ তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।
৭. অনলাইন প্রাইভেসি:
২০১৩ সাল ছিলো অনলাইন প্রাইভেসির জন্য জঘন্যতম বছর। কেননা এ বছরই আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসএ) অবৈধ নজরদারির বিষয়টি ফাঁস হয়। অনলাইন প্রাইভেসিকে আরো বেশি লজ্জা দিয়েছে এ গোয়েন্দাগিরীর বিষয়টি আমেরিকার আদালক কর্তৃক অনুমোদিত।
৮. মাইক্রোসফটের সিইও উত্তরাধিকার পরিকল্পনা:
গেল বছরের আরেকটি ন্যক্করজনক ঘটনা ছিলো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের সিইও স্টিভ ব্যালমারের পরবর্তী উত্তরাধিকার নিয়ে বোমাফাটানো। এক মন্তব্যে ব্যালমার বলেন, মাইক্রোসফট তার পরবর্তী সিইও নির্বাচন নিয়ে দোটানায় রয়েছে। কারণ যোগ্য কাউকে খুঁজে পাচ্ছেনা প্রতিষ্ঠানটি। আর এর প্রেক্ষিতেই কোম্পানির অভ্যন্তরে বেশ অন্তর্কলহ শুরু হয়।
৯.এইচটিসি:
গত অর্ধদশক ধরে বেশ উত্থান-পতনেরই মধ্যেই রয়েছে এইচটিসি নামের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু তার মধ্যে গেল বছরটি আরো বেশি জঘন্য ছিল। কারণ বিনিয়োগের সঙ্গে আয়ের বিশাল ফারাক ছিল। এ কারণেই ফ্লপ তালিকায় স্থান হয়েছে এ প্রতিষ্ঠানেরও।
১০.গুগল কিলিং রিডার:
গেল বছরেই গুগল চালু করেছিল ’গুগল রিডার’, কিন্তু শুরুর দিক থেকে তেমন সাড়া না পাওয়ার কারণে গুগল এ রিডার বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এভাবে হঠাৎ করে বন্ধ করে দেয়ার বিষয়টি অনেকেই পছন্দ করেনি। ফলশ্রুতিতে তারা একে ’কিলিং’ বা হত্যা হিসেবেও উল্লেখ করে। এ জন্যই এ ঘটনাও উঠে এসেছে ফ্লপ তালিকায়।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
OK, Thanks.