বর্তমান সময়ের সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর মধ্যে বলতে গেলে সবার উপরেই ফেসবুকের অবস্থান। আর এ ধরনের গগণচুম্বী জনপ্রিয়তার পেছনে বেশ কিছু কারণও রয়েছে। এই যেমন- অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর চেয়ে ফেসবুকে যোগাযোগ রক্ষা করা এবং সম্পর্ক বজায় রাখার কাজটি বেশ কার্যকরী। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আবালবৃদ্ধবণিতা সবার কাছেই প্রিয় ফেসবুক। আর এ কারণে সৃষ্টি হয়েছে অতিমাত্রায় ফেসবুকপ্রীতি। অতিমাত্রার ফেসবুকপ্রীতি বা আসক্তির কারণেই প্রাণ হারাতে বসেছিলেন তাইওয়ানের এক মহিলা পর্যটক।
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে সমুদ্রে সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন ওই মহিলা পর্যটক। এর মধ্যে হঠাৎ মনে হলো একটু ফেসবুক চেক করবেন। তাই ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে স্মার্টফোনটি বের করেই ফেসবুক পেজ ওপেন করলেন। এরই মধ্যে একটি জাহাজর সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন তিনি। কিন্তু ফেসবুকে তিনি এতই বুঁদ ছিলেন যে তিনি সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন নাকি সমান্তরল মাঠে বিচরণ করছিলেন তা কিছুই বুঝতে পারেননি। যার ফলশ্রুতিতে এক পা দুই পা করে তিনি এমন জায়গায় পা দেন, যা তার সমুদ্রে পড়ে যাওয়াটা ঠেকাতে পারেনি। ফল যা হবার তাই হলো সমুদ্রে ডুবে যেতে বসছিলেন ওই পর্যটক। কারণ ওই মহিলা সাঁতার জানতেন না। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতিও ভয়াবহ আকার ধারণ করে বলে জানান ডুবুরী দলের প্রধান ডিন কেলি। তিনি বলেন, ‘আমরা ওই মহিলার পিঠ দেখতে পাচ্ছিলাম। এর মাধ্যমেই আমরা ভেবে নিয়েছিলাম ওই মহিলা সাঁতার কাটতে পারেন না। তাই আমরা ডুবুরী নামিয়ে দিয়ে তাকে উদ্ধারকাজ শুরু করি।’ অবস্থা বিপদজনক হলেও উপস্থিত ডুবুরীদের সহায়তায় পরিস্থিতি বেশ খারাপের দিকে গড়ায়নি বলেও জানান তিনি। মিনিট বিশেকের প্রাণান্তকর প্রচেষ্টায় ডুবুরীদল ওই মহিলা পর্যটককে উদ্ধার করে হাসপাতালের বেডে শুইয়ে দেন । আর তখনই ঘটে মজার কাহিনী।
হুঁশ ফিরে আসার পরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন ওই মহিলা। তার কৃতকর্মের জন্য উপস্থিত সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করেন। হঠাৎ করে ফেসবুক ব্যবহার করবেননা বলেও ঘোষণা দিয়ে বসেন ওই মহিলা। এর মধ্যে তার অবস্থা ক্রমেই ভালোর দিকে যেতে থাকে। অবস্থা ভালো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার ঘোষণা ভেঙ্গে আবারো তিনি ফেসবুক ব্যবহার শুরু করেন বলেও মন্তব্য করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক। উল্লেখ্য, ফেসবুক ব্যবহার আসক্তির পর্যায়ে চলে গেলেই এ ধরনের অবস্থার সৃষ্টি হয় বলে মন্তব্য করেছেন একজন মনোচিকিৎসক। আর এ ধরনের আসক্তি কোন সময়েই শুভ কিছু বয়ে আনেনা বলেও জানান তিনি। সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে অতিমাত্রায় আসক্ত হয়ে পড়লে যে কোন সময় অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। উপর্যুক্ত মহিলার ঘটনার মতো মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ারও সম্ভবনা থেকে যায় বলে উল্লেখ করেন ওই মনোচিকিৎসক।
তথ্যসূত্র: বিবিসি.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
OK, Thanks.